এক বছরে জাপানে চালের দাম বেড়েছে ৯১ শতাংশ

জাপানে জুলাই মাসে চালের দাম বছরে ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য এ কথা জানানো হয়েছে।
তবে গত কয়েক মাসের তুলনায় দাম বৃদ্ধির হার কিছুটা কমায় প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার জন্য সামান্য স্বস্তি এসেছে।

টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই বছরের নির্বাচনে উভয় কক্ষে তার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর ইশিবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ক্রমবর্ধমান দামের কারণে ভোটাররা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে।

২০২৩ সালে তীব্র গরম ও এক “মেগা ভূমিকম্প” সতর্কতার পর আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ আসন্ন সংকটের আশঙ্কায় আগে থেকেই চাল ক্রয় করে করতে শুরু করে। এভাবে ব্যাপক হারে চাল ক্রয় ছাড়াও অন্যান্য কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চালের দাম বেড়েই চলছিল।

সামগ্রিকভাবে জুলাই মাসে জাপানের মূল মুদ্রাস্ফীতি জুনের ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি এখনো জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বিওজে) দুই শতাংশ লক্ষ্যসীমার ওপরে রয়েছে, যার ফলে চলতি বছর সুদের হার বাড়ানোর প্রত্যাশা আরও জোরদার হয়েছে।

শুক্রবার ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের অভিজিৎ সূর্য বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা ঠান্ডা হলেও, তা অক্টোবর থেকে ব্যাংক অব জাপানের কঠোর নীতি পুনরায় শুরুতে বাধা দেবে না।’

খাদ্যের দাম বাদ দিলেও, এই পঠন বাজারের প্রত্যাশা ৩ দশমিক ০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি ছিল।

জ্বালানিও বাদ দিয়ে, ভোক্তা মূল্য ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে , জুন মাসেও একই রকম। ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) সর্বশেষ জানুয়ারিতে সুদের হার বাড়িয়েছিল কিন্তু মুদ্রানীতি আরও কঠোর করতে অনিচ্ছুক।

লক্ষ্যমাত্রার ওপর মুদ্রাস্ফীতি অস্থায়ী কারণগুলোর মধ্যে চালের দামও রয়েছে।

এই মাসে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বিওজে’র ওপর মূল্যবৃদ্ধির চাপ আরও বাড়িয়ে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতির ‘আড়ালে’ রয়েছে।

শুক্রবার ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের অভিজিৎ সূর্য বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা ঠান্ডা হলেও, তা অক্টোবর থেকে ব্যাংক অব জাপানের কঠোর নীতি পুনরায় শুরু করতে বাধা দেবে না।’

চালের মজুদ:

জুন মাসে চালের দাম আগের বছরের তুলনায় ১০০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি ছিল। মে মাসে এ হার দাঁড়িয়েছিল ১০১ দশমিক ৭ শতাংশ।

দাম কমাতে ইশিবা নতুন কৃষিমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন এবং জরুরি চাল মজুত বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। চলতি মাসে সরকার চাল উৎপাদন কমাতে উৎসাহিত করার দীর্ঘদিনের নীতি পরিবর্তনেরও ঘোষণা দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জাপানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি চাল আমদানির আহ্বান জানিয়েছেন।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে জাপানের অর্থনীতি বার্ষিক ভিত্তিতে ১.০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সত্ত্বেও আশঙ্কার তুলনায় কম ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *