চট্টগ্রাম কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যানার-ফ্যাস্টুন টাঙ্গানো নিয়ে এ সংঘর্ষের সূচনা হয়।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজ ক্যাম্পাসে উভয় গ্রুপের কর্মীরা পাল্টাপাল্টি শ্লোগান ও মুখোমুখি অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। এসময় উভয় পক্ষের ক্যাডাররা হকিস্টিক, রামদা, লাঠিশোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর উভয় গ্রুপকে থামাতে না পেরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষ চলাকালে এবং পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের ১০/১৫জন আহত হয়েছে।

এই সংর্ঘষ চলাকলে নবাগত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করে বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেয়।

সংঘর্ষে জড়ানো দুইপক্ষের একটির নেতৃত্বে আছেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম এবং অন্যটির নেতৃত্বে সুভাষ মল্লিক সবুজ।

এদের মধ্যে সুভাষ মল্লিক চকবাজারের যুবলীগ নেতা নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী। আর মাহমুদুল করিমের পক্ষটি নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির অনুসারী।

নগরীর রাজনীতিতে নূর মোস্তফা টিনু প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির এবং রনি নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল ১০টার দিকে সুভাষ মল্লিকের অনুসারীদের একজন কলেজের মূল ফটক সংলগ্ন ব্যাংকের কাছে এলে তাকে অপর পক্ষের ছেলেরা মারধর করে। এরপর থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের মধ্যে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই পক্ষই মুখোমুখি হয়ে পড়লে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে মাহমুদুল করিমের অনুসারীদের গণি বেকারির দিকে এবং ‍সুভাষ মল্লিকের অনুসারীদের চকবাজারের দিকে সরিয়ে দেয়।

এরপর বেলা পৌনে ১২টার দিকে সুভাষ মল্লিকের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা লাঠিশোঠা নিয়ে কলেজ রোডে কয়েক দফা মিছিল করে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে সরিয়ে দেয়।

পরে সুভাষের অনুসারীরা আবার কলেজের পশ্চিম গেইটের কাছে জড়ো হয়। তখন পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের চকবাজারের দিকে সরিয়ে দেয়।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে মাহমুদুল করিমের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে একই এলাকায় আসতে চাইলে পুলিশ লাঠিপেটা করে।

পুলিশের লাঠিপেটায় চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন মহসিন কলেজের অ্যাকাউন্টিং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার পলাশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা যায়।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গতকাল রোববার ব্যানার টানানো নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে আজকেও ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু’টি গ্র“প ঝামেলা সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বারণ করে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।