রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের সামনে থেকে ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানার বাবা জয়নাল আবেদীনকে আটক করেছে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা থানা-পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। তিনি জানান, অপহরণের ঘটনায় সোহেল রানার বাবা জয়নাল আবেদীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজশাহীর মতিহার থানার পুলিশ নওগাঁর পথে রওনা হয়েছে।
এর আগে ছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরের মতিহার থানায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অপহরণের মামলা করেন। মামলায় ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, ওই ছাত্রীর সন্ধান দাবি করে শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে কর্মসূচি স্থগিত করেছেন তাঁরা। তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শনিবার সকাল দশটায় ফের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলা বিভাগে বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ওই ছাত্রীর সন্ধান দিতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। আমাদের ইচ্ছার বাইরে কেউ জোর করে আমাদের ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিতে পারে না। অথচ তাঁর সাবেক স্বামী কীভাবে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে যায়?’
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে জানিয়েছে, তারা সব জায়গায় খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আমি এখনো জানি না আমার মেয়ে কোন জায়গায়, কী অবস্থায় আছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমার অনুরোধ, আমার মেয়ে যেন অক্ষতভাবে ফিরে আসে। আপনারা সহযোগিতা করেন মেয়েটাকে যেন জীবিত পাই, যেন উধাও না হয়ে যায়।’ এ ঘটনায় মতিহার থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি।
সোহেল রানার বোন রুমঝুম বলেন, বিয়ের পর থেকেই তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে বনিবনা হতো না। হঠাৎ একদিন তাঁরা শুনতে পান, তাঁর ভাইকে ওই মেয়ে তালাক দিয়েছে। এ বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। কোনো নোটিশও তাঁরা পাননি। তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি বলতে পারছেন না বলে দাবি করেন।
শুক্রবার সকালে পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাপসী রাবেয়া হল থেকে বের হন ওই ছাত্রী। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে পৌঁছালে তাঁর ‘সাবেক স্বামী’ সোহেল রানাসহ আরও কয়েকজন যুবক তাঁকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।