পবিত্র লাইলাতুল কদরের তাৎপর্য ও আমল

আজ রোববার দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর।

হাদিস শরিফে আছে, ২০ রমজানের পর যেকোনো বিজোড় রাত কদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজানের দিবাগত রাতেই লাইলাতুল কদর আসে বলে আলেমদের অভিমত। শবে কদরের এ রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয় এবং এই রাতকে কেন্দ্র করে কোরআন শরিফে ‘আল-কদর’ নামে একটি সুরাও নাজিল করা হয়।

লাইলাতুল কদরের মর্যাদা এত বেশি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতটি পাওয়ার জন্য রমজানের শেষ দশকে আজীবন ইতেকাফ করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেছেন-

  • তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে সন্ধান করো। (মুসলিম)। সে হিসেবে এ রাতগুলো হলো- ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯।।

  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের শেষ ১০ দিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর।’ (বুখারি)

  • আমি কদরের রাতের সন্ধানে (রমজানের) প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। তারপর আমার প্রতি ওহি নাজিল করে জানানো হলো যে, তা শেষ ১০ দিনে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে। তারপর মানুষ (সাহাবায়ে কেরাম) তাঁর সঙ্গে ইতেকাফে শরিক হয়।’ (মুসলিম)

অন্য সময় এক হাজার মাস ইবাদত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, কদরের  রাতে ইবাদত করলে তার চেয়ে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এ কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে সওয়াব হাসিল ও গুনাহ মাফের রাত হিসেবে শবে কদরের ফজিলত অতুলনীয়।

শবে কদরের দিনের ও রাতের কিছু ইবাদত, আমল আছে। নিম্নে তা দেয়া হলো –

শবে কদরের দোয়াঃ  

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর— তাহলে তখন কোন দোয়া পড়বো? তখন তিনি বললেন, তুমি বলো—

اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি।

অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩)

সন্ধ্যাকালীন আমলঃ

  • চল্লিশ বার এই দোয়া পড়া-  “সুবাহান আল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর”
  • সন্ধ্যার সময় গোসল করে তাহিয়াতুল ওজুর নামাজ পড়া ।

নামাজের আমলঃ

  • দুই রাকায়াত করে শবে কদরের নামাজ পড়তে হবে। প্রতি চার রাকাআত নামাজ এর পর সন্ধ্যাকালীন পড়া দোয়া পড়া ও মোনাজাত করা।
  • সালাতুত তাসবীহ পড়া।
  • ওমর কাজা নামাজ পড়া ( সকল ওয়াক্তিয়া নামাজের কাজা পড়া )

অন্যান্য ইবাদতঃ

  • আজ রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিলো ,তাই পবিত্র কোরআন বেশি বেশি এই রাতে তেলওয়াত করার মাধ্যমে অসংখ্য নেকী হাসিল করা যাবে।
  • আজকের  দান সদগায় করলে অন্যান্য দিনের তুলনায় হাজারগুণ বেশি সওয়াব হবে ।

মহান আল্লাহ সুবানাহু তায়ালা আমাদের সকলকে আমল করার তৌফিক দান করুন, আমীন।