উত্তর কোরিয়ার কারাগারে ১৫ মাস আটক থাকার পর সম্প্রতি মুক্ত হওয়া মার্কিন শিক্ষার্থী অটো ওয়ার্মবিয়ার মারা গেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনসিনাতি শহরের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। ওয়ার্মবিয়ারের পরিবারের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। এক বিবৃতিতে ওয়ার্মবিয়ারের পরিবার জানায়, তাঁর কথা বলার সামর্থ্য ছিল না, দেখতে পেতেন না এবং তাঁকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারতেন না। পরিবারের অভিযোগ, উত্তর কোরিয়ায় কারাবন্দি থাকা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন ওয়ার্মবিয়ার। ২০১৬ সালে অবকাশযাপনে পাঁচ দিনের জন্য উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন ২২ বছরের ওয়ার্মবিয়ার। সেখানে হোটেলে থাকা একটি রাজনৈতিক পোস্টার ছিঁড়ে পকেটে পোরার অপরাধে তাঁকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন উত্তর কোরিয়ার আদালত। কারাভোগের দুই মাসের মাথায় কোমায় চলে যান তিনি। এক বছর ধরে অটো ওয়ার্মবিয়ের কোমায় থাকার বিষয়টি তাঁর পরিবারের কাছেও গোপন রাখা হয়েছিল। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বচিউলিজম’ নামে এক অসুখে তাঁর এই অবস্থা হয়েছে। কিন্তু এই অসুখ কীভাবে হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষ দেয়নি। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সরকার বলছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে তিনি কোমায় গিয়েছিলেন এবং ২০১৬ সালের মার্চে তিনি ঘুমের বড়ি নিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা বলছেন, অটোর অসুস্থতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার কোমা অবস্থাতেই ওয়ার্মবিয়ারকে তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। দেশে ফেরার পর চিকিৎসকদের একটি প্যানেল তাঁকে পরীক্ষার পর মস্তিষ্কে আঘাতের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি উত্তর কোরিয়াকে একটি ‘নিষ্ঠুর রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, অন্যায় কারাবন্দির জন্য উত্তর কোরিয়াকে দোষী মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরো বলেছেন, অন্যায় এই কারাদণ্ডাদেশের জন্য উত্তর কোরিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে।