নব্বইয়ের দশকের আলোচিত ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
গত রোববার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিন থেকে মুক্তি পান বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তিনি জানান, জেল কোডের ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দী রেয়াতসহ ২০ বছর সাজা খাটা শেষ হলে বিধি অনুযায়ী তার মুক্তির প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর জোসেফের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফ্রিডম পার্টির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান হত্যা মামলার আপিলে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ।
এর আগে এ মামলায় নিম্ন আদালতে ও হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল জোসেফকে। মামলার আরেক আসামি কাবিল সরকারকে খালাস দেন সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৯৬ সালের ৭ মে মোহাম্মদপুরে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে মোস্তাফিজুর রহমান পিস্তলের গুলিতে নিহত হন। পরদিন মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী রাশিদা পারভীন। এজাহারে তিনি লিখেন, তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ও তার কয়েকজন সঙ্গী চাঁদা না পেয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের লাইসেন্স করা পিস্তল কেড়ে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করেন।
১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর এ মামলায় চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৪ সালের ২৫ এপ্রিল ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এর রায় হয়। রায়ে তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ও মাসুদ জামাদারকে মৃত্যুদণ্ড এবং কাবিল সরকার, আনিস আহমেদ ও হারিস আহমেদকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জোসেফ, মাসুদ ও কাবিল। বাকি দু’জন পলাতক থাকায় তারা কোনো আপিল করেননি।
২০০৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় হাইকোর্টের রায় প্রকাশিত হয়। এতে মাসুদ জামাদারকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া জোসেফ ও কাবিলের দণ্ড বহাল রাখা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন হাইকোর্টে দণ্ড বহাল থাকা দু’জন। তাদের আপিল আবেদনে আদালত তাদের মধ্যে জোসেফের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন ও কাবিলকে বেকসুর খালাস দেন।