আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী থাকবে না। তবে মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে। আর অক্টোবরের মাঝামাঝি এই সরকার দায়িত্ব নিতে পারে।’ আজ মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এই নির্বাচনী সরকারে কারা থাকবে আর কারা থাকবে না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবেন কারা থাকবেন, কারা থাকবেন না।’
আগামী অক্টোবরের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাদশ নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাউকে নমিনেশন দেওয়া হয়নি। অক্টোবরের মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। এ ক্ষেত্রে শরিকদের জন্য ৬৫-৭০টি আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে রাজনৈতিক মেরুকরণ কীভাবে হয়, তার ওপর।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিতর্কিতরা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবে না। এখনো মনোনয়ন দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্ত কোনো প্রার্থীকে জানানো হয়নি। যাদের অবস্থান জনগণের কাছে ভালো, তাদের কিছু টিপস দেওয়া হয়েছে। আরো গণমুখী প্রচারণার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টি মন্ত্রিসভায় দু-একজনকে রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আওয়ামী লীগ নেতা আরো বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করবে। আর বিএনপি এলে জোটবদ্ধভাবেই নির্বাচন করবে। সব ক্ষেত্রে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে।’
এ সময় ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা আসলে বিষয় নয়। তাঁর অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করতে চাইছে। এর মাধ্যমে তাদের আন্দোলনের ব্যর্থতাকে সফলতায় রূপ দিতে চাইছে বিএনপি। বিএনপি জাতীয় ঐক্য নয়, জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য করতে চাইছে। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো জাতীয় ঐক্য হতে পারে না। আওয়ামী লীগবিহীন জাতীয় ঐক্য হলো জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। এর সঙ্গে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কোনো সম্পর্ক থাকবে না।’
গত ৮ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল কাদের নীল সাগর ট্রেনে করে উত্তরাঞ্চল সফরে যান। তাঁর সফরের কারণে ট্রেনের অন্য যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে—পত্রিকায় এমন প্রতিবেদন প্রকাশের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো জনদুর্ভোগ হয়নি। এ নিয়ে মিডিয়া কিছু বাড়াবাড়ি করেছে। ট্রেনে ৬৫০ জন যাত্রী ছিল। তারা আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছে। তারা কেউ দুর্ভোগের কথা বলেনি। নীল সাগর ট্রেন আমাদের কারণে পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে পৌঁছেছে বলে পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে, যা সঠিক নয়। ঈদের পর থেকে ট্রেনটি এমনিতেই পাঁচ-ছয় ঘণ্টা বিলম্ব হতো। তার পরে ধরে নিলাম আমাদের কারণে ৬৫০ জন যাত্রীর ভোগান্তি হয়েছে। এই যে বিএনপি নয়াপল্টনে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অফিস খোলার দিনে সমাবেশ করে, লাখ লাখ লোকের যাতায়াতের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে, সেগুলোর তো কোনো রিপোর্ট দেখলাম না।