এগারো বছর পর বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া যে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলতে নামল, মিরপুরের সেই ম্যাচের প্রথম দিনেই দেখা গেল জমজমাট ক্রিকেট যুদ্ধ। দুই দলই ইনিংসের শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়।
ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং নেয় – আর দিনের প্রথম চার ওভারের মধ্যেই মাত্র দশ রানে পড়ে যায় তাদের প্রথম তিন উইকেট।
আবার দিনের শেষ চার ওভারে অস্ট্রেলিয়াও হারায় তাদের প্রথম তিনটি উইকেট – শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে তারা তুলেছে তিন উইকেটে ১৮ রান। হাতে সাতটি উইকেট নিয়ে তারা এখনও পিছিয়ে ২৪২ রানে।
দুই দলের এই দুই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝেই বাংলাদেশকে টেনে তোলেন ওপেনার তামিম ইকবাল ও পাঁচ নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান – তাদের ১৫৫ রানের দুর্ধর্ষ পার্টনারশিপের মধ্যে দিয়ে।
তামিম ও সাকিব দুজনেরই ব্যক্তিগত কেরিয়ারে এটা দেশের হয়ে খেলা তাদের ৫০তম টেস্ট, আর সেই সুবর্ণজয়ন্তী মাইলস্টোনকে প্রথম দিনেই তারা স্মরণীয় করে রাখলেন এই পার্টনারশিপের মধ্যে দিয়ে।
টেস্টে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটা বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপও বটে।
দুজনেই অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তামিম ৭১ রানে ম্যাক্সওয়েলের বলে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়ে আর সাকিব ব্যক্তিগত ৮৪ রানে লিয়ঁ-র বলে স্টিভ স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে শেষ পর্যন্ত অল আউট হয় ২৬০ রানে। বৃষ্টির জন্য খেলা অল্প কিছুটা সময় বিঘ্নিত হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া এদিন প্রথম ইনিংসে অন্তত নয় ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছিল।
এই সীমিত সময়ের মধ্যেও কোয়ালিটি স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ানদের দুর্বলতা কিন্তু কিছুটা হলেও প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
নিজের ৮ রানের মাথাতেই যেমন মেহেদি হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। এশিয়ার মাটিতে এই নিয়ে তিনি টেস্টে মোট আটবার অফ-স্পিনারদের উইকেট দিলেন।
যে বলে তিনি আউট হন, ঠিক তার আগের বলেও তাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নেওয়ার পর ‘ইনসাইড এজে’র সুবাদে তিনি সে যাত্রা বেঁচে যান – কিন্তু পরের বলেই আর শেষ রক্ষা হয়নি।
স্পিনের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না উসমান খাজাও – খুব ঝুঁকি নিয়ে একটা সিঙ্গলস নিতে গিয়ে রান আউট হন তিনি।
এরপর শূন্য রানে নাইট ওয়াচম্যান নাথান লিয়ঁর উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান – ১৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে নামবেন ওপেনার রেনশ (৬ নট আউট) আর অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ (৩ নট আউট)।
এখন তারাও সাকিব-তামিমের মতো দলকে বিপদ থেকে টেনে তুলতে পারেন না কি বাংলাদেশের স্পিনারদের ফাঁদে পা-দেন, তার ওপরই ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নির্ভর করছে।