টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজের গল্পটাও বাংলাদেশের জন্য হতাশার। দক্ষিণ আফ্রিকায় কিছুই ভালো হচ্ছে না টাইগারদের সঙ্গে। প্রথম ওয়ানডেতে হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি ককের রেকর্ড জুটির পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এবি ডি ভিলিয়ার্সের মহাকাব্যিক ব্যাটিং। বাংলাদেশের বোলাররা বল করবেন আর প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা বেদম পেটাবেন এটিই যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তৃতীয় ম্যাচে আর প্রতিপক্ষের বীরত্বে গল্প দেখতে চায় না বাংলাদেশ। যে কোনো মূল্যে জয়ের খাতাটা খুলতে চান মাশরাফিরা। রোববার ইস্ট লন্ডনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় ম্যাচটা শুরু হবে দুপুর ২টায়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে প্রায় প্রতিটি ম্যাচে দুঃসংবাদ শুনেছে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজে তামিম ইকবাল চোটে পড়েন। ওয়ানডেতে ব্যথা এমন বেড়ে যায় যে, পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে পড়েন এই ওপেনার। এদিকে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও ইনজুরির কারণে বাদ পড়ে গেছেন। ভালো ফর্মে নেই বোলাররা। তাসকিন-মাশরাফি-রুবেলরা নিজেদের খুঁজে ফিরছেন এই সিরিজে।
টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সেরা রান সংগ্রাহকের তিনটি নামই দক্ষিণ আফ্রিকার। ২১৪ রান নিয়ে ওয়ানডে সিরিজের সেরা রান সংগ্রাহক হাশিম আমলা, ১৯৫ রান করেছেন কুইন্টন ডি কক। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ১৭৬ রান করা ডি ভিলিয়ার্স রয়েছেন তিন নম্বরে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা একটু আলো ছড়িয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও ইমরুল কায়েস। দুই ম্যাচে মুশির রান ১৭০ ও ইমরুলের সংগ্রহ ৯৯। এই দুজন ছাড়া প্রোটিয়া পেসারদের সামনে আর কেউই মাথা উঁচু করতে পারেননি।
বোলারদের অবস্থা আরো খারাপ। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ১৭ উইকেট নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। সেখানে বাংলাদেশের বোলাররা নিতে পেরেছেন মাত্র ছয়টি। রুবেল চার ও সাকিব নিয়েছেন মাত্র দুটি উইকেট।
ইস্ট লন্ডনে মাঠে নামার সময় দারুণ একটি রেকর্ড করবেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়ক হিসেবে দেশকে ৫০তম ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। বাংলাদেশিদের মধ্যে এমন রেকর্ড রয়েছে আর মাত্র দুজন অধিনায়কের। হাবিবুল বাশার ৬৯ ও সাকিব আল হাসান ৫০ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন। মাশরাফির রেকর্ডের ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচটা জিতলে সিরিজের সেভাবে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এরই মধ্যে সিরিজটা নিজেদের করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে বাংলাদেশ জিতলে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে মনোবলটা চাঙ্গা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জয় মাত্র একটি ম্যাচে। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের মাঠে এখন পর্যন্ত সেটিই একমাত্র জয় হয়ে আছে বাংলাদেশের। দ্বিতীয় জয়টা কি ইস্ট লন্ডনে আসবে? ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের খাতা খুলতে পারবে বাংলাদেশ? উত্তর মিলবে ইস্ট লন্ডনে।