কর্মচারীর হাতে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মচারীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত আট থেকে নয়জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় বর্তমানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কলা ও সামাজিক অনুষদের ডিন এবং বাংলা বিভাগের সভাপতি ড. এম আবদুল আলীমের সঙ্গে গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে নিরাপত্তাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে শিক্ষক আলীমকে বেদম মারপিট করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকও তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সভায় অংশ নেন। এ খবর পেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠিসোটা নিয়ে সভাস্থলে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। এ সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়। ভাঙচুর করা হয় অন্তত ৩০টি মোটরসাইকেল ও প্রশাসনিক ভবনের জানালার কাঁচ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর জানান, কর্মচারীর হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও লিটন নামের কর্মচারীর কথাকাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ চার থেকে পাঁচজন আহত হয়। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংগঠিত হয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে গেলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের প্রক্টর আওয়াল কবির জয় বলেন, ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। বৈঠকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।’
বিচারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা শনিবারের কর্মসূচি সমাপ্ত করেছে বলেও জানান প্রক্টর।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড ও সামাজিক অনুষদ বিভাগের ডিনের পদ থেকে ড. আবদুল আলীমকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি।
কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির সভাপতি শামসাদ ফখরুল বিষয়টি জানিয়েছেন।