সিলেট নগরের চালিবন্দর এলাকার একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদ করায় পূজা উদ্যাপন পরিষদের এক নেতার বাসায় হামলা চালিয়েছেন এক তরুণ। ওই নেতাকে বাসায় না পেয়ে তাঁর আড়াই বছর বয়সী নাতনিকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন ওই তরুণ। এ সময় আরেক নারীকেও বেধড়ক পেটান তিনি। দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার সকালে এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে নগরের চালিবন্দর এলাকায় বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট মহানগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি অতীন্দ্র দেবকে মারার উদ্দেশ্যে খলিলুর রহমান (২৮) নামের এক তরুণ দুই ফুট লম্বা একটি রড নিয়ে বাসায় ঢোকেন। অতীন্দ্রকে না পেয়ে তাঁর আড়াই বছর বয়সী নাতনি প্রিয়া দাশকে রড দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন।
এরপর বাসা থেকে বেরিয়ে একই এলাকার কাজলী কর (৩৫) নামের এক নারীকেও বেধড়ক পেটান খলিল। তাৎক্ষণিকভাবে এলাকার লোকজন ছুটে এসে আহত দুজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রডের আঘাতে দুজনের মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। দুজনের মাথায় একাধিক সেলাই দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পরপরই হিন্দুধর্মাবলম্বী নেতারা চালিবন্দর এলাকায় অতীন্দ্র দেবের বাসায় ছুটে যান। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ খলিলকে ধরতে রাতভর জেলার একাধিক স্থানে অভিযান চালায়। গতকাল দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার এলাকার জালালপুর থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অতীন্দ্র দেব বাদী হয়ে খলিলকে একমাত্র আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে বৃহস্পতিবার রাতেই একটি মামলা করেন।
সিলেট কোতোয়ালি থানার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার সাদেক কাউসার দস্তগীর জানান, গত বছরের এপ্রিলে চালিবন্দর এলাকায় ভৈরব মূর্তি ভাঙচুরের সঙ্গে খলিল সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই মামলার আসামি হিসেবে তাঁর পাঁচ বছরের সাজাও হয়। মন্দির ভাঙচুরের পরপরই অতীন্দ্র দেব ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনসহ এ-সংক্রান্ত মামলাটি দেখভাল করে আসছিলেন। সম্প্রতি খলিল সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার পাশাপাশি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার অতীন্দ্র দেবের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়েই তাঁর বাসায় হামলা এবং শিশুসহ ওই নারীকে গুরুতর আহত করেন তিনি।