বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ৩৭৮টি চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এবার বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় এসব চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
এই উপজেলায় এবার বোরো মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন। উপজেলায় ৫৩০টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে ১৫২টি চালকলের মালিকেরা সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এতে ৩ হাজার ৭৩৩ দশমিক ৯৫০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ নিশ্চিত হয়। কিন্তু ১৩ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার দুটি খাদ্যগুদামে ২ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পরিতোষ কুমার কুণ্ডু বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এক চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, সরকারি চাল সংগ্রহে চালকলের মালিকেরা চুক্তিবদ্ধ না হলে আগামী দুই বছর, অর্থাৎ চার মৌসুমে এসব চালকলের মালিকেরা কোনো বরাদ্দ পাবেন না। আবার কোনো চালকলের মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়ে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দিতে ব্যর্থ হলে এক বছর, অর্থাৎ দুই মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দিতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, জেলার মধ্যে এই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি চাল সংগ্রহের বরাদ্দ আসে।
এবার সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের চুক্তি করেননি এমন ১০-১২ জন চালকলমালিক বলেন, সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ ৫ টাকা বেশি পড়ে। এতে চালকলমালিকদের লাখ লাখ টাকা লোকসান হবে। এমনিতেই তিন-চার বছর ধরে চালকলমালিকেরা লোকসানের কারণে পুঁজি হারিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ঋণে জর্জরিত। তারপরও দেখেশুনে কোনো ব্যবসায়ী নিজের গলায় দড়ি ঝোলাতে চান না।
উপজেলা সদরে অবস্থিত মেসার্স খাজা চালকলের মালিক নাজমুল আরেফিন বলেন, ‘লোকসান মাথায় নিয়ে সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছি। শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে সারা বছরই চাতাল চালু রাখতে হয়। ব্যবসা একসময় ভালো হবে, আবার একসময় খারাপ হতে পারে।’
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের দাম ৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি কেজি চালের দাম ৪০ টাকা নির্ধারণ করতে হতো। আমরা ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের
সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছি। সরকার কোনো কথাই শুনতে চায় না।’
দুপচাঁচিয়ায় ৩৭৮টি চালকল কালো তালিকাভুক্ত
