ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি হলে ছাড় নয়: মায়া

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সরকারি কর্মকর্তা ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সরকারের যথেষ্ট ত্রাণসামগ্রী রয়েছে। তাই ত্রাণ নিয়ে কেউ যেন কোনো কথা না বলে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ নিয়ে কোনো রকম দুর্নীতির ছোঁয়া যেন না লাগে। সেটা লক্ষ রাখতে হবে। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির যদি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়, সে দলের হোক, বাইরের হোক, প্রশাসন হোক, উচ্চপর্যায়ের লোকও হোক—তাকে কিন্তু ছাড় দেওয়া হবে না। এটা মাথায় রেখে পবিত্রতার সঙ্গে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব।’
আজ রোববার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল। সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল প্রমুখ।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সামনে হয়তো আরও বড় ধরনের বন্যা আসতে পারে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এবং চীনের মতো বড় দুটি দেশে ব্যাপক পানি হয়েছে। ওই পানি তো এদিক দিয়েই আসবে। যার কারণে আমাদের আগাম প্রস্তুত থাকা দরকার। আমাদের সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হবে।’
সভায় জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, এ পর্যন্ত জেলার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৩০টি ইউনিয়নের ১৯৪টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬০ হাজার ৩৩৮টি পরিবারের ২ লাখ ৪১ হাজার ২১৩ জন মানুষ। এ ছাড়া ৫০০টি পরিবারের ১২ হাজার ৭৫৭ জন মানুষ নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচা রাস্তা ৮১ কিলোমিটার এবং ২৫৪ হেক্টর পাট, আউশ, আমন বীজতলা ও শাকসবজির খেত পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার্ত মানুষের জন্য ৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র চলমান থাকায় ৪ হাজার ৯২০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের চরকাবিলপুর গ্রামে বন্যাকবলিত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। মন্ত্রী ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের ৬০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, এক কেজি মুড়ি, এক কেজি লবণ, এক কেজি চিনি, এক কেজি চিড়া, এক ডজন মোমবাতি ও এক ডজন দেশলাই সংবলিত একটি করে প্যাকেট দেওয়া হয়।