এই একটা ম্যাচ তাঁর জন্য এসেছিল ইতিহাস গড়ার উপলক্ষ্য হয়ে। জিতলেই ওপেন যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সে গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী মেয়ে টেনিস তারকা হয়ে যেতেন ভেনাস উইলিয়ামস। ওপেন যুগের হিসাব বাদ দিন, ১৯০৮ সালে শার্লট স্টেরির পর সবচেয়ে বেশি বয়সে মেয়েদের এককে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডটা গড়া হয়ে যেত যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ বছর বয়সী টেনিস কন্যার।
কিন্তু এত কাছে এসেও তাঁর ইতিহাস গড়া তো হলোই না, বরং দুর্দান্ত শুরু করেও শেষে এসে উড়ে গেলেন গারবিনিয়ে মুগুরুজার সামনে। ভেনাসকে অসহায় দর্শক বানিয়ে উইম্বলডনের শিরোপা উল্লাস করলেন ২৩ বছর বয়সী স্প্যানিশ তারকা। ম্যাচটা জিতে নিলেন ৭-৫, ৬-০ গেমে। টুর্নামেন্টে অষ্টম শিরোপার আশায় থাকা ভেনাস নন, উইম্বলডনের অনার্সবোর্ডে প্রথমবারের মতো উঠল মুগুরুজার নাম।
রেকর্ডটা ভেনাসের ‘ঘরে’ই ছিল। এই উইম্বলডন জিতেই গত বছর মার্টিনা নাভ্রাতিলোভাকে পেরিয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে গ্র্যান্ড স্লামের মেয়েদের এককে জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন ভেনাসের দুই বছরের ছোট বোন সেরেনা। এই বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে নিজের রেকর্ডই নিজেই আবার ভাঙেন ৩৫ বছর বয়সী সেরেনা। কাল ভেনাস পারলেন না বোনের রেকর্ডটা নিজের করে নিতে।
অথচ শুরুটা কী দুর্দান্ত করেছিলেন ভেনাস! প্রথম সেটের প্রথম নয় গেমে দুজনই নিজেদের সার্ভিস জিতে নেন (৫-৪)। দশম গেমে ভেনাসের দুর্দান্ত সুযোগ এল মুগুরুজার সার্ভিস ভাঙার। দুটি সেট পয়েন্টও পেয়েছিলেন (১৫-৪০)। কিন্তু জিততে পারলেন না। সেখান থেকে দোর্দন্ড প্রতাপে ফিরে আসেন মুগুরুজা। ম্যাচের সবচেয়ে ধ্রুপদী টেনিসটুকুই হলো ওই সময়ে। দুজনই বেসলাইনে দাঁড়িয়ে টানা ১৯ শটের র্যালি করলেন, শেষ পর্যন্ত যেটির সমাপ্তি হলো ভেনাসের রিটার্ন জালে আটকে যাওয়ায় (৩০-৪০)।
ভেনাসও যেন আটকে গেলেন সেখানে। দুর্দান্ত এইসে ওই গেমে সমতা ফেরান মুগুরুজা। গেমটা জিতেও নেন। তাতেই শেষ ভেনাসের যত প্রতিরোধ! পরের গেমেই তাঁর সার্ভিস ভেঙে দেন মুগুরুজা। ওই সেট তো বটেই, ম্যাচে আর একটা গেমও জেতেননি ভেনাস! মার্কিন মেয়ে অসহায় চোখে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন স্প্যানিশ কন্যার দুর্দান্ত বেসলাইন গেম, আর জোরাল সব রিটার্ন। প্রথম সেটের নিষ্পত্তি হলো ৭-৫-এ, দ্বিতীয় সেটে তো শুধুই মুগুরুজার উল্লাস। প্রথম সেটটা যেখানে গড়ায় ১ ঘন্টা ১৭ মিনিট, দ্বিতীয় সেট শেষ মাত্র ২৩ মিনিটেই।