নিমোর বাবার উচিত ছিল নারীতে রূপান্তরিত হওয়া। জনপ্রিয় অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ফাইন্ডিং নিমোর একটি চরিত্র নিয়ে একদল বিজ্ঞানী এমন মত দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, ক্লাউনফিশ নামে পরিচিত সামুদ্রিক মাছেরা তাদের জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর পর নিজেদের লৈঙ্গিক পরিচয় পাল্টে ফেলে। নিমোর বাবা তো সে রকমই একটি মাছ।
ছবিতে দেখা যায়, নিমোর মাকে একটি অতিকায় বারাকুডা মাছ গ্রাস করে। কিন্তু তার বাবা মার্লিন বেঁচে যায়। এ সময় একমাত্র জীবিত সন্তান নিমো হারিয়ে যায়। মার্লিন তার ছেলেকে খুঁজতে শুরু করে। একপর্যায়ে নিমো তার বাবার কাছে পৌঁছানোর পথ খুঁজে পায়।
কিন্তু বাস্তবে কোনো ক্লাউনফিশ মরে গেলে তার সঙ্গী লিঙ্গ পাল্টে পুরোপুরি স্ত্রী মাছে রূপান্তরিত হয়, এমনকি ডিমও পাড়ে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সিটারের একদল গবেষক এই তথ্য দিয়েছেন। সেই হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে স্ত্রী ক্লাউনফিশে পরিণত হয়ে অন্য পুরুষ সঙ্গী খুঁজে নেওয়াই মার্লিনের উচিত ছিল।
ক্লাউনফিশের গায়ের রং কমলা, তাতে নীল-সাদা-কালো ছোপও থাকে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পরিবেশে এরা জীবন কাটায়। পুরুষ মাছ ডিমের দেখাশোনা করে এবং শিকারিদের কবল থেকে রক্ষার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে পাহারা দেয়। কখনো কখনো তারা পাল্টা আক্রমণও চালায়। বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, স্ত্রী ক্লাউনফিশ তুলনামূলক বড় আকারের শরীর ধারণ করে এবং পুরুষের তুলনায় তারা বেশি আগ্রাসী হয়ে থাকে। এই মাছেরা কখনো কখনো হাঙরের দিকে তেড়ে যায়।
ক্লাউনফিশ নিয়ে ফ্রান্সে একদল গবেষক বহু বছর ধরে গবেষণা করছেন। তাঁরা প্রাণীটির আচরণ, মনস্তত্ত্ব এবং হরমোন পরিবর্তনের বিষয়গুলো খুঁটিয়ে দেখছেন। এই প্রক্রিয়ায় তাঁরা একপর্যায়ে দেখতে পান, স্ত্রী ক্লাউনফিশ যখন মরে যায় বা অন্য মাছের গ্রাসে চলে যায়, তখন পুরুষ ক্লাউনফিশ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লিঙ্গ পরিবর্তন করে। গবেষক সুজান মিল বলেন, পুরুষ প্রাণীটি দ্রুত প্রজননক্ষম স্ত্রী প্রাণীতে রূপান্তরিত হতে পারে।